ছবি: রাতের খাবারের জন্য অপেক্ষমান ঢাকা জেলের বন্দীরা, ১৯০৬ সাল।
বিস্তারিত কাহিনী: এই জেলখানা আগে পরিচিত ছিল 'ঢাকা কেল্লা' নামে। মোগলরা ঢাকায় আসার আগেও এই কেল্লার অস্তিত্ব ছিল। বাংলার মোগল সুবাদার ইসলাম খানের আমলে (ঢাকায় তাঁর শাসনকাল ১৬১০-১৩ সাল) ‘ঢাকা কেল্লা’ ছিল একমাত্র সরকারি দালান। প্রথম দিকে মোগল সুবাদাররা এখানেই থাকতেন, অন্যান্য প্রয়োজনেও এটিকে ব্যবহার করা হতো। যেমন—টাঁকশাল ও বন্দিশালা।
পরে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির শাসনামলে ১৭৮৮ সালে কেল্লার ভেতরে একটি ক্রিমিনাল ওয়ার্ড নির্মাণ করা হয় এবং শেষ পর্যন্ত এই কেল্লাকে কারাগারে রূপান্তর করা হয়। তখন নাম হয় ‘ঢাকা জেল’। তখন সেখানে ১০টি ওয়ার্ড ছিল এবং গড়ে ৫০০ থেকে ৫৫০ জন বন্দি রাখা হতো। প্রথম দিকে একজন বন্দির দৈনিক খাবারের পেছনে দুই পয়সা করে খরচ হতো। ১৭৯০ সালে সেটা বাড়িয়ে এক আনা করা হয়।
১৮৩৯ সালে ঢাকার সিভিল সার্জন জেমস টেলরের এক রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ঢাকা জেলার দেওয়ানি ও অপরাধসংক্রান্ত জেলগুলো প্রাচীন দুর্গ (ঢাকা কেল্লা) এলাকায় অবস্থিত। ঢাকা জেলে ১০টি ওয়ার্ড আছে। প্রতিটি ওয়ার্ডের সামনে আছে খোলা আঙিনা। আর পুরো জেলখানাটি বেশ জায়গা নিয়ে চারদিক থেকে একটি উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। টেলর সাহেব জেলের কয়েদিদের একটি পরিসংখ্যানও দিয়েছেন। সে সময় ঢাকা জেলে দেওয়ানি আদালতে সাজা পাওয়া কয়েদি ছিল ৩০ জন। আর অন্যান্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত ৮০০ জন। সে সময় তৈরি হয়েছিল জেল হাসপাতাল। সম্ভবত ঢাকা জেলের ভেতরেই ছিল সেটি। হাসপাতালটি ছিল ৭০ ফুট লম্বা আর ২৪ ফুট প্রশস্ত একটি দালান।
Dhaka City, Bangladesh
সংরক্ষিত
No comments:
Post a Comment